প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি

অনেকের জানার আগ্রহ প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি অথবা প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকা করে যদি একটি পোস্ট করতেন, তাহলে অনেক উপকৃত হতাম। তাদের উদ্দেশ্য করেই এই পোস্ট টি লেখা হয়েছে।

প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি
প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি

আমাদের মন, শরীর ও স্বাস্থ্য কে সুস্থ রাখতে কিংবা সুস্থ থাকতে হলে সকল ধরনের পুষ্টির প্রয়োজন হয়। একটি সুস্বাস্থের জন্য দেহে  প্রোটিন, আয়রন, গ্লুকোক, মিনারেল, ক্যালশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন থেকে শুরু করে সকল ধরনের উপাদনই প্রয়োজন। তবে আজ আমরা প্রোটিন যুক্ত খাবার নিয়ে আলোচনা করবো। অর্থাৎ দৈনন্দিন খাবারগুলোর মধ্যে কোন কোন খাবার থেকে আমরা প্রাকৃতিক ভাবেই প্রোটিন এর চাহিদা পুরন করতে পারবো।  সে সকল প্রোটিন জাতীয় খাবার নিয়েই আজকের এই আয়োজন।

প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি

আমাদের অনেকেরই মধ্যে একটা ভুল ধারনা রয়েছে যে- কেবল মাত্র মাছ, গোস্তো এবং ডিম থেকেই বোধহয় প্রোটিন পাওয়া যায়। এছাড়া অন্য আর কোন খাবার-ই নেই, যা থেকে প্রোটিন এর চাহিদা পুরণ করা যাবে। আবার অনেকে মনে করেন, নিম্ন আয়ের লোকজন বলেন, এসব খাবার অনেক দামী, এগুলো বড় লোকদের খাবার। কারণ, আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে ইত্যাদি ইত্যাদি।

কিন্তু না! এছাড়াও আরও অনেক খাবার রয়েছে যা থেকে আমরা প্রোটিন এর চাহিদা পুরন করতে পারি। যার দাম অনেক কম, এবং হাতের নাগালেই পাওয়া যায়। এসকল নিম্ন আয়ের লোকজনদের উদ্দেশ্য করে বলছি- আপনি যেনে খুশি হবেন যে, অসংখ্য প্রোটিন যুক্ত খাবার রয়েছে যা আপনার অজান্তেই প্রতিনিয়ত খাচ্ছেন। শুনতে অবাক লাগলেও কথাটি ১০০% সত্য। তাহলে চলুন প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকা থেকেই এর বাস্তব অভিজ্ঞতা নেয়া যাক।

যে কোন ডাল থেকে প্রোটিন

যে কোন ডাল থেকেই আপনি পাবেন প্রচুর পরিমানে প্রোটিন। ডাল যেহেতু গরীব, ধনী সহ সকল শ্রেণীর মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে।  তাই ডাল কেই প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকায় প্রথম রাখলাম। ডাল পছন্দ করেন না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব।  পাতলা ডাল, ঘন ডাল, ডাল চড়চড়ি, ডাল ভর্তা, ডাল বরা সহ হরেক রকমের ডাল আমরা খেয়ে থাকি।

অন্যদিকে মুসুর ডাল, মুগ ডাল, খেশারি ডাল, ছোলা, মটরশুঁটি, হরেক রকমের ডাল বাজারে পাওয়া যায়। এবং তা প্রতিনিয়ত সকল শ্রেণীর মানুষই খেয়ে থাকি। এসকল ডাল থেকে ১০০ গ্রাম থেকে গড়ে ৭ থেকে ৮ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। তাহলে এখন বুঝতেই পারছেন কত সহজেই আমরা প্রোটিন এর চাহিদা পূরণ করতে পারছি।

কুমড়োর বীজ থেকে প্রোটিন

কুমড়ো আমাদের অতি পরিচিত একটি সবজি। প্রায় সব মানুষই কম বেশি কুমড়ো খেয়ে থাকি। তবে কুমড়ার বীজ আমরা অনেকেই খাইনি। আজ থেকে জেনে রাখুন এই অবহেলিত কুমড়োর বীজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন।  যা আপনার শরীরে প্রোটিন এর চাহিদা পূরণ করতে স্বক্ষম।

সয়াবিন তেল থেকে প্রোটিন

প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি
প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি

সয়াবিন কে আমরা গৃহপালিত তেল বললে বোধহয় ভুল হবে না। কারন সয়াবিন তেল ছাড়া আমাদের কোন প্রকার রান্না সম্পন্ন হয় না। একটা কথা না বললেই নয়। সয়াবিন কাহাকে বলে, কত প্রকার, কি কি?  তা আমরা করোনা মহামারী পর থেকে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।  

আরো পড়ুন >>    বেশি প্রোটিন খেলে কি হয়  ?

বিশেষ করে আমার বাসায় সয়াবিন শেষ হয়েছে, এ কথা শুনলেই আমার মাথায় একটা চক্কর মারে। বাট, কিছুই করার নেই। বাঁচতে হলে সয়াবিন কিনতেই হবে। যাইহোক, এই গৃহপালিত তেল থেকেও পাবেন প্রচুর পরিমানে প্রোটিন।  যার পরিমান মাংসের থেকেও বেশি।

দধে ভরপুর প্রোটিন 

আমি বলি দুধ হলো আল্লাহর দেয়া নেয়ামতের মধ্যে একটি অন্যতম স্বর্গীয় দান। যা মানবজাতির মঙ্গলের জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখে। দুধে প্রোটিন ছাড়াও রয়েছে সকল প্রকার ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস।এক কাপ পরিমা গরুর দুধে গড়ে প্রায় ৪ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এবং ১৫০ ক্যালোরি পাওয়া যায়। 

দই 

প্রোটিন জাতীয় খাবারের মধ্যে অন্যতম হলো দই। দুধ থেকে তৈরি হয় এই দই। কিছু টাকা দিলেই হাতের নাগালে মিলে দই। এই দই-তে রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন। তবে দুঃক্ষ জনক হলেও সত্য- আমরা অধিকাংশ মানুষই জানিনা যে, এই দই তৈরি হয় কি ভাবে। একটা কথা মনে পড়ে গেলো। যদিও এই আলোচনার বিষয় না। তবুও বলি- 

৯০ দশকের দিকে গ্রামগঞ্জের মায়ের নিজের হাতে দই তৈরি করতেন। ফজরের নামাজ পরে গরুকে খাবার দিতো ভাতের মার আর কিছু ভুশি বা ধানের খোশা। এটা দেয়ার কারন ছিলো গরু দুধ বেশি দিবে। এই দুধ থেকেই শরীরের ঘাম ঝড়িয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তৈরি করতো দই। তাহলে বুঝতেই পারছেন এই দইটা কত পিওর ছিলো।

আমি পূর্বের ইতিহাস তুলে ধরার কারন হলো সেই দই আর বর্তমান বাজারের দই এর গুগগত মান আমার বিবেচনা আকাশ পাতাল ব্যবধান তারপরেও খাদ্যে ভ্যাজাল করার যে প্রতিযোগিতা চলতেছে। এই অবস্থায় একটু যাচাই বাছাই করে এই ক্রয়ের অনুরোধ জানাচ্ছি।  না হলে প্রোটিন তো দুরের কথা, হিতে বিপরীত হয়ে পেট নষ্ট হতে পারে।

পনির | PANEER

পনিরো তেরি হয় দুধ থেকে। যা ভরপুর প্রোটিন জাতীয় খাবারের উৎস। পনির মাংস কিংবা মাছের বিপরীতে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে কাজ করে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতিদিন ২০০ গ্রাম পনির খেলে  ৩০/৩২ গ্রাম করে প্রোটিন পাওয়া যায়। ছোট বড় সকলের প্রোটিনের চাহিদা পূরণে পনির একধাপ এগিয়ে আছে।

ডিম

ডিম আনাদের নিত্য প্রয়োজনীর একটি পন্য। ডিম পোচ,ভাজা, ভূনা সিদ্ধ সহ নানান খাবারের সাধ বাড়াতে আমরা ডিমের ব্যবহার করে থাকি। তাই স্বল্প মূল্যে দেহে প্রোটিন বাড়াতে পারি খুবই সহজে। কারন, এই ডিমে থাকা প্রোটিন,ভিটামিন, মিনারেল ও হেলদি ফ্যাট আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়াও ডিমে রয়েছে এক প্রকারের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা আপনার ত্বক ও চোখের সুরক্ষা দিবে। সেই সাথে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা গানিতিক হারে বেড়ে যাবে। কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরি কম থাকায় শরীরের ভ্যাট বা মোাটা হওয়ার দুশ্চিন্তা করতে হয় না। ১টি ডিমে গড়ে ৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়, তবে হলুদ কুশুমের চেয়ে সাদা অংশে প্রোটিন এর মাত্রা বেশি থাকে।

বাদাম

বাজারে হরেক রকমের বাদাম পাওয়া যায়। সকল প্রকার বাদামের ভিতরেই রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন। যেমন- কাঠ বাদাম, চিনা বাদাম, কাজু বাদাম, কেস্তা বাদাম, পেস্তা বাদাম সহ সকল ধরনের বাদাম থেকেই আপনি আপনার শরীরের প্রোটিন এর চাহিদা পূরণ করতে পারবেন। বাদাম দিয়ে তৈরি খাবার ও রয়েছে প্রোটিন জাতীয় খাবার এর তালিকায়। শুধু তাই নয়, বাদাম থেকে প্রোটিন এর পাশাপাশি ম্যাগনেশিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন-ই সহ আরও অনেক পুষ্টির সন্ধান পেয়ে যাবেন। আপনি এ কথা নতুন জানলে অবাক হবেন যে- প্রতি ১০০ গ্রাম বাদাম থেকে প্রায় ২৪ গ্রাম প্রোটিন পেয়ে যাবেন। যা একজন মানুষের প্রতিদিন প্রোটিন এর চাহিদার সমান।

মুরগির বুকের মাংসে অধিক প্রোটিন 

আপনি আশ্চর্য হলেও ঠিকই শুনেছেন। একটি গোটা মুরগির মাংশে যে প্রোটিন থাকে, তার বেশির ভাগই রয়েছে মুরগির বুকের মাংসে বা স্তনে। কারন,  বুকের মাংশে চর্বি থাকে না বললেই চলে। এতে শরীর মোটা হবে না। তবে প্রোটিন পাবেন ভরপুর। মুরগীর বুকের মাংস থেকে প্রায় ৫৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ২৮০ ক্যালোরি পেয়ে যাবেন। 

ব্রকলি

অনেকের কাছে ব্রকলি নামটি নতুন মনে হতে পারে। তাদেরকে বোঝানোর জন্য একটু ধারনা দিলাম- ব্রকলি দেখতে অনেকটা ফুলকপির মত হয়ে থাকে। তবে এর রং সবুজ হয়, যা সবজির দোকানেই পেয়ে যাবেন। যাইহোক, এই সবজি জাতির ব্রকলি তরকারি-তে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন-সি সহ নানান পুষ্টি উপাদান। আপনার শরীরের প্রোটিন এর চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি, মরণঘাতী ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসাবেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ব্রকলি রাখতে পারেন। ১০০ গ্রাম ব্রকলিতে প্রায় ৩ গ্রাম প্রোটিন এবং ৩৫ ক্যালরি পাওয়া যায়।

 গরুর মাংস 

গরুর মাংস কে প্রোটিন এর ভান্ডার পলা যেতে পারে। বিশেষ করে চর্বিযুক্ত গরুর মাংসে হিউজ পরিমানে প্রোটিন থাকে। এর সাথে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন তো আছেই। তবে দুঃখের বিষয় হলো আমাদের দেশে গরুর মাংস এখন সাধারণ মানুষদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে।

যাইহোক, প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে প্রায় ৩০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এবং ১৯০ গ্রাম পর্যন্ত ক্যালোরি থাকে। তবে এই মাংসে রয়েছে অধিক ফ্যাট রয়েছে। যারা শরীরের হাড্ডি এবং চামড়ার মাঝে একটু গোস্তো বানিয়ে বডি বিল্ডার হতে চান, তাদের জন্য গরুর মাংস বেশ কাজে দিবে।

মাছ | Fish

প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি
প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি

মাছে ভাতে বাংঙ্গালি মানে, মাছ ছাড়া এক বেলাও চলেনা। আমরা জানি মাছ আমিষ জাত খাবার। যদিও মাছে আমিষের পরিমাণ বেশি, তবে প্রোটিন এর পরিমান নেহাত কম নয়। মাছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে, যা হৃদরোগীদের জন্য খুবই প্রতিশোধ। ১০০ গ্রাম মাছ থেকে গড়ে ২৪ গ্রাম প্রোটিন ও ৯৫+ ক্যালোরি থাকে।

শেষ কথাঃ

মানব দেহে পুষ্টি উপাদান গুলোর মধ্যে প্রোটিন একটি অন্যতম উপাদান। যার ঘাড়তি থাকলে শরীরে দেখা দিতে পারে নানান সমস্যা। তাই আজকের আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পারলেন প্রোটিন এর গুরুত্ব সম্পর্কে। সেই সাথে  প্রোটিন জাতীয় খাবার কি কি এবং প্রোটিন যুক্ত খাবারের তালিকা সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ধারণা দেয়া হলো। আশাকরি আপনারা এই সকল প্রোটিন যুক্ত খাবার গেলে প্রোটিন এর চাহিদা পুরন করতে পারবেন। আর এখানেই সমাপ্ত।

Check Also

best collagen powder for skin

Best Collagen Powder for Skin | Benefits | Side Effects

Best Collagen Powder for Skin Collagen can be sourced from bovine, marine, or poultry. Each …

3 comments

  1. Right here is the perfect website for anybody who wishes to find out about this topic. You know a whole lot its almost hard to argue with you (not that I personally would want toÖHaHa). You certainly put a new spin on a subject that has been written about for decades. Excellent stuff, just excellent!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *